বুধবার, ১ মে, ২০১৩

রাজযোগ মেডিটেশন


এইখানে, অতি সহজ  উপায়ে করা যাই ,এমন একটি  মেডিটেশন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে  । মেডিটেশনটির নাম রাজযোগ   মেডিটেশন  । আসুন শুরু করি...

আচ্ছা ,অনেকে বলে , “নিজেকে জানো” ।এই কথাটার অর্থ কি?আমরা নিজেকে কতোটুকু জানতে পারি?
আপনি কালকে কোথায় থাকবেন?কোথায় যাবেন? কি খাবেন? কেমন হবে আপনার চরিত্র? আজকে, “নিজেকে জানো” এই নামটা ব্যবহার করে জৈবিক কার্যাবলী নিয়ে কত টক শো ,নাটক হয়!!!এমনকি পারলে এনাটমি শিক্ষার মাধ্যমে কোন অঙ্গ-এর কি কাজ তা বিস্তারিত চিত্র দেখানো শুরু হয়। লাভ হয় কি এতে? কারো দৃষ্টিভঙ্গি কতোটুকু পালটানো গিয়েছে,তা আমি জানি না।আর, “নিজেকে জানো” শব্দটার বুৎপত্তি কোথায় তা নিয়ে কতোটুকু আলোচনা হয়েছে??বেশী দূর গেলে “নিজেকে জানো” বলতে বুঝায় “আত্নানং বিদ্‌ধি”। বাস!!!! অততুকুই!!! শেষ!!!
আর আমাদের পণ্ডিতরা যখন দক্ষিণার জোরে বা জ্ঞানের ভাণ্ডার পূর্ণতা দেখানোর জন্য পাণ্ডিত্য দেখনো লাগে তখন আত্মা শব্দটি ব্যাবহার করে...আর এমন লেকচার দেয়া শুরু করে যাতে মনে হয় অচেনা জিনিস....আর আমাদের মত সাধারণ মানুষ ঐ সব লেকচার শুনে চরণ যুগল ধরে বলি “আপনি অনেক জানেন... নমঃ নমঃ ...আপনার মত মানুষ দেখি নাই...আপনি মানুষ না দেবতা..........”।অথচ এটা অতি সামান্য একটা ব্যাপার.........।
এবার অন্য প্রসঙ্গে আসি, একটা উদাহরন দিচ্ছি , আমরা যখন চোর ধরি,তখন আমাদের একটা প্রশ্ন উঠে নি,যে লোকটা কেন চুরি করল...?
অনেকে বলবে গরিব মানুষ খেতে পারে না তাই...। ok.. আর যাদের অভাব নেয়, বারবার চুরি করে ...তাদের সম্পর্কে কি বলবেন??? অভ্যাস ।আচ্ছা ,এই অভ্যাস বা সঙ্কস্কারটা কিভাবে দূর করা যায়...এই নিয়ে চিন্তা করে কয়জনে?? পণ্ডিতরদের এই জাইগায় দেখতে পারবেন না...gurranted...
Ok…আরেক প্রসঙ্গে আসা যাক, যিশূ খ্রিস্ট, গৌতম বুদ্ধ,স্বামী বিবেকানন্দ –এর মত এই সব মহাপুরুষ নিয়ে কত conference হয় !!! যিশূ খ্রিস্ট, গৌতম বুদ্ধ,স্বামী বিবেকানন্দ এরা ‘আত্মা’ নিয়ে কত কথাবার্তা বলেছে... এইগুলা নিয়ে conference-এ ওদের শিষ্যদের বলতে শুনেছেন কেউ?আমি শুনি নি। ধর্ম –কর্মের পিছনে কত টাকা যাই... ধর্ম নিয়ে কত মারামারি হয়... অথচ আমরা কে???? আমাদের আসল স্বরূপ কি?এইসব নিয়ে আলোচনা করতে দেখেছেন কোথাও??কেন করে না তা মনে ন্রি-তাত্তিক-দের গবেষণার বিষয়....

একজন মৃত মানুষ আর একজন জীবিত মানুষের মধ্যে পার্থক্য কি?একজনের প্রান আছে আর একজনের প্রাণ নেই। 'প্রাণ' জিনিষটা কি?কেউ কেউ বলে 'প্রাণ' জিনিষটা হল হার্ট বিট ।মানুষের যখন হার্ট বিট বন্ধ হয়ে যায়,তখন মানুষ মারা যায়।আচ্ছা মনে করুন তো এই উত্তরটা কি ঠিক?এমন অনেক সময়ই আছে যে ,'হার্ট বিট'বন্ধ হয়ে গেলও আবার চালু হয়।
আবার অনেকে মনে করে,যে ভালো মন্দের অনুভব আমাদের BRAIN -এর উপর নির্ভর করে...OK...আচ্ছা ভেবে দেখুন তো, আমাদের হঠাৎ করে কোন কোন সময় গান-বাজনা, ছবি আঁকা বা কবিতা লেখা এই ধরণের সংস্কার জেগে উঠে।তার মানে বোঝা যাই ,আমাদের মধ্যে এমন কোন চৈতন্য শক্তি আছে যার উপর নির্ভর করে,আমাদের সংস্কার বা বাঁচা-মরা ।
এই চৈতন্য শক্তিটা হল 'আত্মা'
এইবার প্রশ্নটা হল"আত্মা কি?"।এই আত্মা হচ্ছে এমন এক চৈতন্য শক্তি যার উপর নির্ভর করে আমাদের প্রাণের অস্তিত্ব যা আমাদের ভ্রুকুটির মধ্যস্থলে অবস্থান করে।







ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলা যাক...
গীতাতে আমরা পড়েছি যে, আত্মা অনেক সূক্ষ্ম চৈতন্য শক্তি যাকে কাটা যায় না,আগুনে দহন করা যায় না,বায়ু দ্বারা আর্দ্র করা যায় না। এমনকি চোখ দ্বারা দেখা পর্যন্ত যাই না। অর্থাৎ আত্মা নিরাকার,অবিনাশী।
প্রথমে আত্মার গঠনে যাওয়ার আগে একটা প্রশ্ন জাগতে পারে ,যাকে চোখ দ্বারা দেখা যাই না,তার অস্তিত্ব অনুভব করবো কিভাবে?এই প্রসঙ্গে একজনের কথা মনে পড়ল। উনি হচ্ছেন মহাপুরুষ শ্রী রামকৃষ্ণের শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ।
একদিন স্বামী বিবেকানন্দ পথে হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। হঠাৎ সে মনে মনে বলে উঠল"আমি শক্তিশালী আত্মা"। সাথে সাথে তার মধ্যে একটা শক্তির অনুভব হল। ক্লান্তি দূর হয়ে আবার পথ চলতে শুরু করল।
এইভাবে আমরা যদি মনে করি যে ,আমি সূক্ষ্ম জ্যোতির্ময় আত্মা।আমি শক্তিশালী আত্মা।আমি পবিত্র আত্মা।আমি বিদ্বান আত্মা। ততই আমরা শক্তিশালী ,বিদ্বান হতে পারব।
এখন একটু গভীরে যাওয়া যাক......।।
আত্মা মুলত মন,বুদ্ধি,সংস্কার দ্বারা গঠিত। 'আত্মা' শব্দটা পরিচিত মনে হলেও গঠন সম্মন্ধে অজানা থাকতে পারেন। ব্যপারটা বিস্তারিত বলছি......।
মনঃ- আমরা যখন কোন সঙ্কল্প বা চিন্তা করি তখন অই চিত্রটা ভেসে উঠে মনে।আবার কোন কিছুর অনুভব কিন্তু
         মনে-তে হয়।অনুভব-এর ব্যাপারটা পরে বলেছি।।
বুদ্ধিঃ-আমরা যেই চিন্তাটা করি সেই চিন্তাটার বাছ-বিচার হয় বুদ্ধিতে ।চিন্তাটা খারাপ না ভাল তা নির্ণয় হয়
      বুদ্ধিতে।
ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলা যাক-
ধরুন, ১।আপনি বাজারে যাবেন
২।কখন যাবেন,কিভাবে যাবেন
১নং লাইনটা আত্মার মনে কাজ করবে।আর ২নং লাইনটা আত্মার বুদ্ধিতে কাজ করবে।
এখন আসা যাক, সংস্কারে ।আমাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য-এর ভাল-মন্দ স্বভাব,গুন ব্যপারটা কাজ করে সংস্কারে।
মানুষের ভাল-মন্দ স্বভাবতো আমরা সবাই বুঝি। গুনের ব্যপারটা বুঝিয়ে বলি।
কেউ ছোটবেলা থেকে পিয়ানো বা গিটার-এর প্রতি অনেক আগ্রহ বা ভাল বাজাতে পারে। এইটা হল গুনের সংস্কার। ছোটবেলা থেকে যে সংস্কার জাগবে এমন কোন কথা নাই। মানুষের জীবনের যে কোন সময়ই যে কোন সংস্কার জাগতে পারে। এইসব সংস্কার time অনুসারে জাগ্রত হয়।

এখন আত্মার স্বরূপে আসা যাক......।।


আচ্ছা, আমরা আইনার সামনে দাঁড়ালে যে চেহারাটা ভেসে উঠে সেটা কি আমাদের আসল স্বরূপ ? অশান্তিতে জর্জরিত,ক্রোধে উন্মত্ত , কাম বাসনায় মগ্‌ন -চেহারাটা দেখে কি কোনদিন এই ধরনের প্রশ্নটা আসে নি?
এইটা আবার কি কথা??? আত্মার সাথে চেহারার কি সম্পর্ক?
আমি আগেই বলেছি যে, আত্মার মধ্যে মন থাকে। চেহারা হচ্ছে মনের দর্পণ। এইটা আবার কি রকম কথা???
একটু খেয়াল করি, আমরা যখন শান্ত বা শান্তিতে থাকি তখন কি ঘটে ? শান্ত-স্বরূপে আমাদের মনটা শান্তিতে থাকে। তখন চেহারাই প্রসন্ন ভাব কাজ করে।****
আবার আরেকটা জিনিস দেখি ,যখন কোন ধর্মীয় সংস্কার- মুসলমানদের রোযা,হিন্দুদের পূজা ,বৌদ্‌ধদের বা খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উৎসব - ইত্যাদির মধ্যে আমরা যখন থাকি তখন আমাদের কি অনুভব হয়?
কি অনুভব হয় বলুন তো ??? খুশি ,আনন্দ ,পবিত্রতা ****
এবার আরেকটা পয়েন্ট -এ আসি ,আমাদের যখন মন দূর্বল অবস্থায় থাকে ,সবার সাথে খাপ খাওয়াতে পারি না ,কোনকিছু নির্ণয় করতে পারি না,সহ্য করতে পারি না তখন একটা অভাব কাজ করে,বলুন তো সেটা কি?
কি?? কি?? সেটা হচ্ছে ,শক্তি****
এইবার '*' পয়েন্টগুলো আরেকবার দেখি, মনে মনে চিন্তা করি তো আত্মার স্বরূপগুলো ...।
আত্মার স্বরূপঃ
১।আমি আত্মা শান্ত-স্বরূপ
২।আমি আত্মা শান্তি-স্বরূপ
৩।আমি আত্মা শক্তি-স্বরূপ
৪।।আমি আত্মা পবিত্র-স্বরূপ
৫।।আমি আত্মা আনন্দ-স্বরূপ


এইবার মূল পয়েন্ট -এ আসি...।
যারা এইটুকু মন দিয়ে পড়েছেন তাদেরে মনে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে ,সেটা হচ্ছে যে ,আত্মার এইসব স্বরূপে থাকতে পারি না কেন?বা ভুলে গেলাম কিভাবে?????
আমাদের চারপাশের পরিবেশ মনের উপর প্রভাব ফেলে। আমরা এই জীবনে চলতে চলতে আত্মার সংস্কারও পরিবর্তন হয়। এইটা আবার কি ধরনের কথা কইতাছি???দাঁড়ান বুঝাইয়া কইতাছি...।।
একজন মানুষ যখন কোন খারাপ পরিবেশে গেল...ঐখানে কয়েকদিন থাকলে কি ধরনের পরিবর্তন হবে,বলুন তো?...খারাপ আচরণ করবে...কথায় কথায় গালি অথবা মারামারি করবে।
আর আরেকজনকে কোন ভাল পরিবেশে গেল....সেখানে কয়েকদিন থাকলে কি ধরনের পরিবর্তন হবে,বলুন তো?সোজা ব্যাপার...ভাল আচরণ করবে...।
এই থেকে বুঝা যাই,পরিবেশ মনের উপর প্রভাব ফেলে।
এইভাবে,ভালমন্দ পরিবেশে চলতে চলতে আমরা আমাদের আত্মার স্বরূপ ভুলে যায়।
এখন কথা হল, আত্মার স্বরূপ(identity)ফিরিয়ে আনব কিভাবে? পরমাত্মার সাথে আত্মার যোগের মাধ্যমে...।

পরমাত্মা - এইটা কি??এই জিনিসটা সম্মন্থে একটু বলা দরকার...

আমরা যেমন আত্মা উজ্জ্বল ,জ্যোতির্ময়ী সূক্ষ্ম । ঠিক পরমাত্মা সূক্ষ্ম আত্মা কিন্তু তিনি শান্তির সাগর...জ্ঞানের সাগর......শক্তির সাগর...







রাজযোগ মেডিটেশন...

এই রাজযোগ মেডিটেশনের মাধ্যমে আমরা আমাদের আত্মার স্বরূপ ফিরিয়ে আনতে পারব...


পড়ার সাথে সাথে visualize বা চি্ন্তন করবেন......তাহলে সহজে বুঝতে পারবেন...
প্রথমে মনে করি,আমি এক জ্যোতির্ময়ী আত্মা...।তারার মত উজ্জ্বল ...।ভ্রূকুটির মধ্যস্থলে অবস্থিত।
তারপর,মনে করি, ঠিক তার উপরে আরেকটি আত্মা ...লাল বর্ণের... শান্তির সাগর...জ্ঞানের সাগর...শক্তির সাগর...নাম হচ্ছে পরমাত্মা।
পরমাত্মা থেকে সাদা বর্ণের শান্তির বর্শা বা শীতল শান্তির ঝর্নার ধারা পরছে... সেই ঝর্নার ধারা আত্মার উপর পরছে...আমি সেই ঝর্নার ধারাতে আমি সমাহিত...স্নাত...আমার আত্মা থেকে চারিদিকে শান্তির বর্শা ছড়িয়ে যাচ্ছে ...চারিদিক শান্তি শান্তি আর শান্তি...।





পরমাত্মা থেকে পবিত্রতার বর্শা বা পবিত্রতার ঝর্নার ধারা পরছে... সেই ঝর্নার ধারা আত্মার উপর পরছে...আমি সেই ঝর্নার ধারাতে আমি সমাহিত...স্নাত...আমার আত্মা থেকে চারিদিকে পবিত্রতার বর্শা ছড়িয়ে যাচ্ছে ...চারিদিক পবিত্রতা,পবিত্রতা আর ...পবিত্রতা...।
পরমাত্মা থেকে শক্তির বর্শা বা শাক্তির ঝর্নার ধারা পরছে... সেই ঝর্নার ধারা আত্মার উপর পরছে...আমি সেই ঝর্নার ধারাতে আমি সমাহিত...স্নাত...আমার আত্মা থেকে চারিদিকে শক্তির বর্শা ছড়িয়ে যাচ্ছে ...চারিদিক শক্তি,শক্তি আর শক্তি।

একটু কষ্ট করে বারাবার practice করুন......কম্পক্ষে দিনে চার থেকে পাঁচবার...পনের মিনিট করে


রাজযোগ মেডিটেশনের সুফলঃ
১। এর মাধ্যমে আমরা পরম শান্তির অনুভব করতে পারি।
২। আমরা আমাদের সেই হারানো দিব্য গূণগূলো ফিরে পেতে পারি।
৩।এর মাধ্যমে আমরা অতীন্দ্রিয় শান্তি,আনন্দ অনুভব করতে পারি।
৪। মাথা ঠাণ্ডা রেখে যেকোনো কঠিন কাজ সহজে করতে পারি......।।
৫।আমরা আমাদের অশুভ সঙ্কস্কার-এর বদলে শুভ সঙ্কস্কার ফিরিয়ে আনতে পারব।

এই বিষয়ে যারা আরও জানতে  চান বা বাসায় বসে যারা মেডিটেশন করতে চান ভিডিও ফাইলটি download করে নিন।

http://www.youtube.com/watch?v=DJOk99Q1Kmk


THE ACADEMY FOR A BETTER World       : "দি একাডেমী ফর এ বেটার ওয়ার্ল্ড"-এইখানে রাজযোগ মেডিটেশন শিখানো হয়। এর মূল কেন্দ্র ভারতে "BRAMHA KUMARIES "  নামে পরিচিত। সারা বিশ্বে এর অনেক BRANCH আছে। এই রাজযোগ মেডিটেশন -এর কোর্স বিনা মূল্ল্যে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে শিখানো হয়।
পরিশেষে,একটা কথা বলি, জ্ঞানের কোন সীমা নেই...এখানে সামান্য কয়েকটি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে হলে "দি একাডেমী ফর এ বেটার ওয়ার্ল্ড"-এ আসার আমন্ত্রন রইল...
ঠিকানাঃ-
The Academy for a Better World
ভোলানন্দগিরি আশ্রম,সেন্ট্রাল মহিলা কলেজে-এর বিপরীতে...।
টিকাটূলি,১২০৩
PHONE NO:- 01911383442

আরও বিস্তারিত জানতে এই  link click করুন  ...

https://sites.google.com/site/meditationrajyoga/










HyperSmash www.hypersmash.com